কবি হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লংফেলো (১৮০৭-১৮৮২) একজন আমেরিকান কবি ও শিক্ষাবিদ। তিনি প্রথম আমেরিকানদের মধ্যে প্রথম Dante Alighieri এর ডিভাইন কমেডি অনুবাদ করেন। লংফেলোর জন্ম মেইন পোর্টল্যান্ডে, যা তখনও ম্যাসাচুসেটসের অংশ ছিল। তিনি Bowdoin কলেজে পড়াশোনা করেন এবং ইউরোপে সময় কাটানোর পর Bowdoin এবং পরে হার্ভার্ড কলেজে অধ্যাপক হন। তাঁর প্রথম প্রধান কাব্য সঙ্কলন ছিল ভয়েস অব দ্য নাইট (১৮৩৯) এবং ব্যাল্যাডস এবং অন্যান্য কবিতা (১৮৪১)। তিনি ১৮৫৪ সালে অধ্যাপনা তার লেখায় মন দিতে পারেন থেকে অবসর, এবং তিনি তার জীবনের বাকি বসবাস করতেন বিপ্লবী যুদ্ধের সদর দফতরের জর্জ ওয়াশিংটন মধ্যে ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেট্স। তার প্রথম স্ত্রী মেরি পটার ১৮৩৫ সালে মারা যান। তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফ্রান্সিস অ্যাপলটন ১৮৬১ সালে তার পোশাকে আগুন লেগে পুড়ে মারা যান। দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যুর পর লংফেলো কিছু সময়ের জন্য কবিতা লিখতে অসুবিধা বোধ করেছিলেন এবং বিদেশী ভাষা থেকে অনুবাদ করার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি ১৮৮২ সালে মারা যান।
লংফেলো অনেক গীতিকবিতা লিখেছেন। প্রায়শই পৌরাণিক কাহিনী এবং কিংবদন্তির গল্প উপস্থাপন করেন। তিনি তার সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় আমেরিকান কবি হয়েছিলেন এবং বিদেশে সাফল্য পেয়েছিলেন। ইউরোপীয় রীতি অনুকরণ এবং বিশেষ করে জনগণের জন্য লেখার জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ঊনিশ শতকের আমেরিকান জনপ্রিয় ‘Fireside Poets’-এর অন্তর্ভুক্ত একজন কবি। এই কবিরা আমেরিকা ও বিদেশি পাঠক ও সমালোচকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলো।
ওয়াডসওয়ার্থ কয়েকটি ইউরোপীয় ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর রচনা রোমান্টিসিজম দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত। ৭৫ বছরের জীবনে তিনি অসংখ্য সাহিত্যকর্ম সৃজন করেছেন। তন্মধ্যে Evangeline (১৮৪৭), The Song of Hiawatha (১৮৫৫) এবং Paul Reveres Ride’ (১৮৬৩) রচনাগুলির মাধ্যমে কবি এবং ঔপন্যাসিক হিসাবে নাম কুড়িয়েছিলেন।
চার্লস নদীর কাছে
নদী! নিঃশব্দে বাতাসে
তৃণভূমি পেরিয়ে, উজ্জ্বল এবং বহমান,
যতক্ষণ না তুমি বিশ্রামের সন্ধান পাবে
সমুদ্রের বুকে!
দীর্ঘ বছরের মিশ্র অনুভূতি,
আধেক বিশ্রামে এবং আধেক বিবাদে,
আমি তোমার জল দেখেছি
সম্মুখে, জীবন স্রোতের মত।
নীরব নদী! তুমি আমাকে শিখিয়েছ
অনেক গভীর এবং দীর্ঘ শিক্ষা;
তুমি তো উদার দাতা;
আমি কিন্তু তোমাকে দিতে পারি গান।
দুঃখ এবং শোকের বাইরে
আমি তোমার ধীরে ভেসে চলা দেখেছি,
সৌন্দর্যের স্থিরতা অবধি
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাও জোয়ারের মত।
এবং আরও ভালো সময় এবং উজ্জ্বলতর,
যখন দেখেছিলাম তোমার জলের ঝিলিক
আমি অনুভব করেছি আমার মৃদু হৃদস্পন্দন,
এবং তোমার স্রোতের সাথে আন্দোলিত।
এই একা নই আমি, তোমাকে ভালোবাসি,
নাহ্, তোমার নীল ঢেউয়ের কারণে নয়,
তোমার উপরের আকাশ সমুদ্র থেকে
তাদের নিজস্ব স্বর্গীয় রং নাও তুমি।
যেখানে ছায়াময় বনভূমি
তোমায় আড়াল করে,
এবং তোমার জলে অদৃশ্য হয়ে যাবে।
তোমার পাশে আমার ভালোলাগার বন্ধুরা আছে,
এবং প্রিয়, আমার তৈরি হয়েছে সীমারেখা।
এর চেয়েও বেশি;
আর নাম মনে করিয়ে দেয় তিনটি বন্ধু,
সমস্ত সত্য এবং চেষ্টা;
এবং জাদুর মতো নামটি আমাকে আবদ্ধ করে
বাঁধে আপন করে, তোমার কাছাকাছি।
বন্ধুরা আমার হৃদয় আনন্দে স্মরণ করে!
তারা কিভাবে শিহরণ শিখার মতো শুরু করে,
আমি যখন প্রাণশক্তি পূর্ণতার হাওয়ায় ভাসি,
আমার হৃদয়ের চূড়ায়!
‘এই জন্য, তুমি নীরব নদী!
আমার প্রাণ তোমার প্রতি উদ্বেলিত;
তুমি উদার দাতা,
এই অলস গানটি তুমি আমার কাছ থেকে নাও।
বাদলের দিন
দিনটি শীতল, আঁধার এবং বিষন্ন;
বৃষ্টি পড়ে এবং বাতাস কখনই হয় না পরিশ্রান্ত;
আঙ্গুরলতা এখনও আছে আঁকড়ে ধরে ছাঁচের দেয়ালে
অথচ প্রতিটি প্রবল অভিব্যক্তি মরা পাতার মত ঝরে পড়ে,
দিনটি আঁধার এবং বিষণœ।
আমার জীবন শীতল, আঁধার এবং বিষণœ।
বৃষ্টি পড়ে এবং বাতাস কখনই হয় না পরিশ্রান্ত
আমার ভাবনাগুলো এখনও আছে
আঁকড়ে ধরে অতীতের ছাঁচে গড়া দেয়ালে,
অথচ যৌবনের আশা গুলো জমাট বাঁধে বিস্ফোরণে
দিনটি আঁধার এবং বিষণœ।
স্থির হও, বেদনার্ত হৃদয় পুনঃনির্মাণে ক্ষান্ত হও।
এখনো মেঘের আড়ালে সূর্য জ্বলে;
তোমার অদৃষ্ট তো সকলের সাধারণ অদৃষ্ট,
প্রতিটি জীবনে নিশ্চয়ই কিছুটা বৃষ্টি পড়তে হবে,
কিছু দিন নিশ্চয়ই হতে হবে আঁধার এবং বিষণœ।
তীর এবং গান
আমি বাতাসে তীর নিক্ষেপ করেছি,
ধরণীর বুকে পড়ল, কিন্তু কোথায় পড়ল জানতাম না;
কারণ: এত দ্রুত এটি উড়ে গেল,
দৃষ্টিশক্তি অনুসরণ করতে পারেনি এই উড্ডয়ন।
আমি নিঃশ্বাসের সাথে বাতাসে একটি গান রেখেছিলাম,
ধরণীর বুকে পড়ল, কিন্তু কোথায় জানতাম না;
এত প্রখর এবং শক্তিশালী দৃষ্টি আছে তবুও,
এটা কি গানের উড্ডয়ন অনুসরণ করতে পারে?
দীর্ঘ, দীর্ঘ সময় পরে একটা ওক গাছের মধ্যে
খুঁজে পেয়েছি তীর, তবু অখণ্ড;
এবং গানটির সূচনা থেকে সমাপ্তি অব্দি,
আবার খুঁজে পেলাম বন্ধুর হৃদয় মাঝে।