ঘনায়িত মেঘমন্ত্রে জাগিল আষাঢ়
ধরণীর পূর্ব্ব সীমানায়, ঋতুরূপী
নিদাঘ-সন্ন্যাসী ধ্যানভঙ্গে ঊর্দ্ধমুখে
চাহিল সহসা, -বহ্নি-জ্বালা নিভে গেছে
দীপ্ত সবিতার, সজল জলদ-মায়া
অগ্নিমুখে টেনে দেছে জল-যবনিকা।
মহাক্রোধে রুখিল সন্ন্যাসী, ঊর্দ্ধে তুলি’
কাল জটা ছাড়িল ফুৎকার, উড়াইবে
মুহূর্ত্তেকে জলদের কান্ত জল-মায়া।
সহসা নামিল ধারা অশ্রান্ত শীতল
মৃত্যুমুখী ধরণীরে উজ্জীবিত করি’
চাতকের শুষ্ক কণ্ঠে সঞ্জীবনী ঢালি।
ভিজে গেল রুক্ষ জটাজুট, তাম্রপৃষ্ঠে
পড়িল এলা’য়ে; নিভিল যজ্ঞের বহ্নি-
ভাসিল আসন দুর্ব্বার বর্ষণ-ধারে।
নিষ্ফল আক্রোশে শুধু দন্ত কড়মড়ি’
ধ্যানাসন ছাড়ি রিক্ত উঠিল সন্ন্যাসী;-
অবসান বহ্নি-তপস্যার।
দীর্ঘ-ঋতু
অগ্নি-পরীক্ষার-এতদিনে শেষ হোল
তার, সঞ্জীবনী সুধারসে জীবন্মৃতা
ধরণীর মর্ম্মদল উঠিল বিকশি’
কদম্ব-কেয়ার বনে অস্ফুট প্রকাশে।
তৃণপত্র কিশলয়ে শিহর-কম্পনে
উজ্জীবিতা শ্যামলিমা নূতন জীবনে
জানাইল আষাঢ়ের আনন্দ-নন্দন।