বাতাবি লেবু
বাতাবি লেবুর পাতা ছোট কবিতাকে
ঝড়ের আদরে বসে, ডাকে-
নিচে সাপ। উড়ে-ওঠা পাখির পালক
মুক্তি চায়। পতন যেখানে খুশি, হোক!
ঝড় কিছু ভ্রূক্ষেপ করে না এখানে;
কেননা, সে জানে
দোলা বা ঝাঁকুনি নয়- এ সত্যই সূত্রের অধরে:
ঝরার সময় হলে, রৌদ্রের ফল খসে পড়ে-
সাপ কোনও উড্ডয়ন ও পতনের স্পর্শে মাত্র নাই
কিন্তু তার ফোঁসফাঁস আজ অযথাই
ভাঁজ দিচ্ছে- ঝড়ের আওয়াজে;
এইসব বিভ্রমের সাঁঝে
কবিতা আগামী পুষছে। ভবিষ্যের অগ্নিস্রোতও রয়েছে তো ঝুঁকে;
কখন ভাসিয়ে নিয়ে- কয়লা করে দেবে, বৃদ্ধ বাতাবি লেবুকে!
জ্যোৎস্না ঋতু
ধান মলনের চাঁদ উঠলো: মেঘ-ফাটানো রাতে,
চল সোনালি, মাড়াই করি- স্বর্ণময়ীর ধান-
জিহ্বা-খসা মিথের ভেতর বাজলো মধুর গান;
জ্যোৎস্না- ঢেউয়ে পদ্মপুকুর জাগলো অকস্মাতে।
বৃদ্ধ শিমুলগাছের পিছে, অন্ধকারের লাশ
লুকাতে চায়; তাকেও দেখি: কেমন শক্তি ধরে!
ভয়ের ভেতর বাস করেছি: ভয় কী রে অন্তরে!
হালছড়িটা সঙ্গে রাখিস আরও কয়েক মাস-
আঁধার ও ভয় পালাচ্ছে দেখ, চড়ার দিকে, দূরে-
জাগার কোনও সময় তো নাই- রাত্রি কিবা ভোর!
জ্যোৎস্না-ম্যাজিক ফুটলো বিপুল বঙ্গভূমি জুড়ে;
লেজ গুটিয়ে পালাচ্ছে: তোর-আমার সুদিন-চোর।
চোর-তাড়ানোর চাঁদ ফুটছে… আকাশভরা আলো,
হত্যাকারীর পেটের ভিতর প্লিহা তো চমকালো!
প্রপাগান্ডা
চালাকির কাছে হার মেনে গেছে আর্দ্র-কোমল শব্দ। প্রচারের কাছে ধোঁকা খেয়ে গেছে— সত্য। মুখোশের পাশে অনেক মুখোশ; খোলামুখ খুব জব্দ। প্রকৃত কথাকে বাইরে এনো না, ওগুলোই অকথ্য।
চার ডানা-অলা পাখিরা উড়ছে। পাখিরা আসছে নিকটে। নিকট এখনও দূরে সরে আছে। ছলনার দিন হাসছে। ডিম যদি-বা ডাইনোসরের— তবু সে কি নয় আণ্ডা?
ওগুলোই আজ প্রকৃত পাখি। শব্দ কোরো না বিকটে। দু’য়ে দু’য়ে চার— রিয়েলিটি নয়; রিয়েলিটি আরও আসছে। সব সমাজেই গোয়েবলস থাকে; সবখানে— প্রপাগান্ডা
নিখিলের সরকার ও রাজনীতি
প্রজাপতির ডানা বিষয়ে, সম্প্রতি, তোমার সংবাদ-সম্মেলন: ব্যথিত করছে আমাকে। আকাশ, গোলাপ ও প্রজাপতি— মানুষের স্বপ্নের মধ্যে বাস্তবতা, কল্পনার মধ্যে অস্তিত্বময়তা এবং সত্যের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে, সার্বজনীন মিথ্যা প্রসব করছে।
সমস্ত স্রোতের মতো নয়। বলা চলে, জেদি বা একরোখা শিরোনামের কোনও ধর্মেই দীক্ষিত নয় সে; বরং সমুদ্রঢেউয়ের কথা ভাবো; সরে যেতে যেতেও, তার রয়েছে: সরণশূন্যতা— ফিরে ফিরেই আছড়ে পড়ছে কূলে; তারপর, নৈঃশব্দ্য। তারপর চলে যাওয়া— যেতে যেতেও, কূল ছুঁয়ে থাকা— গভীর, গোপন।
স্বপ্নবাস্তবের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে, তোমার ওই ঈর্ষা-সম্মেলন, ব্যথিত আর আহত করছে, ক্ষ্যাপাটে করে তুলছে: আমার বিশ্বাস ও সবিনয় অহমিকার পাগলা ঘোড়াকে;
—এরও কিন্তু ভয়ানক পরিণতি আছে!