শাশ্বতী
সামান্য কয়েকটা সবুজ ঢেউ, গম্বুজের মতো সমবায়ী প্রস্তাবনা
আর স্থৈর্য-বিধৌত উত্তাপ জড়ো করেছি।
আরও আছে সুউচ্চ, দৃষ্টিগ্রাহ্য চপল মুখরতা।
এখন কিছুটা অনাস্বাদিত প্রত্যয় যুক্ত করবো লবণের মতো
যেন আনন্দের কোনও দুর্লভ মুহূর্ত: প্রকৃত অবলোকন।
আমি এভাবেই থামিয়ে দেই স্থবিরতা।
অ্যাই, পেখম ছড়িয়ে একটু হাসো তো!
আমার আশ্রয় চাচ্ছে স্লোগানমুখরিত বিভা, ব্যাপ্তি ও জ্যোৎস্না।
ঔজ্জ্বল্য তার বান্ধব
যেন একজন বুননশিল্পী।
বাবুই পাখির মতোন ধরে রাখে অধীর জিজ্ঞাসা।
ঠোঁটে তার মানবিক ভাষা
এই গার্হস্থ্য-কথা, আমি হেস্তিয়ার মতো পৌঁছে দেবো তোমাদের ঘরে।
আমি হতাশাকে এরকমই সমাহিত করি।
অ্যাই, এবার একটু শাশ্বত ঢেউ দাও তো!
রুগ্নতা
রুগ্নতাকে কাটবো আমি ফালি ফালি করে।
তার আর্তনাদ লাকড়ি বানিয়ে চুলি জ্বালাবো।
ভাই, এক চুবড়ি বিস্ময় এনে দে তোর সঞ্চয় থেকে।
ওকে ঘৃত্যক্ত করি।
সুগন্ধী মিশিয়ে বিনিময়যোগ্য করি আর্তদের কাছে।
একটু হাসুক রৌদ্রভরা ভোরে।
সন্দেহকে কাটবো আমি দর্জির মতো মেপে মেপে।
তার কোনও পকেট রাখবো না।
ভাই, একটা চালতা পাতার মতোন সান্ত্বনা এনে দে তোর আশ্রয় থেকে।
ওকে দেবো কঠিন চীবর।
শ্রম ও শান্তি বহনযোগ্য করি পৃথিবীর কাছে।
একটু সার্বিক হোক অনূঢ়া সকালে।
সংবেদ
বাহুল্য-বর্জিত কতিপয় সংবেদ আমি আত্মস্থ করেছি।
ফুলের সাথে ছিলাম কিছুদিন।
একদিন সে আটকে গেলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়-
দীর্ঘদিন পড়ে রইলো ফাইলবন্দি হয়ে।
একদিন সত্যায়নসহ বৈধ হয়ে কর্মীদের মতো ছুটে চললো মাঠে-ময়দানে।
একদিন জেলখানায় বন্দি হলো কোনও একটা তুচ্ছ অজুহাতে।
আর একবার সে গুমের হুমকি পেয়ে চুপচাপ বসে রইলো একাকী।
আমি জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে আমন্ত্রণ করলাম অন্য একদিন।
তারা প্রত্যেকেই এত জ্ঞানী ছিলো যে
তাদের পাণ্ডিত্য থেকে আমি পালাতে চাইলাম।
আমি শরণ নিলাম-বিনীত তৃণগুচ্ছের কাছে।
আমার সংবেদসমূহ সেখানে শিখলো যাবতীয় নৃতত্ত্ব আর ইতিহাস।
শিখলো-সবুজ পাঠশালার মর্মকথা।
শিখলো- বেয়াদবকে একটা কষে থাপ্পড় দিতে হয়।
বাহুল্য-বর্জিত কতিপয় সংবেদ আমি আত্মস্থ করেছি।
ফুলের সাথে ছিলাম কিছুদিন।
আমি তাকে সূর্যের মতো ধ্রুব করেছি।
শিশুটি
প্রভাত-রশ্মির মতো ওকে বহমান ব্যাপ্তি দাও।
অমেয় পরিধি দাও-
গাছের পাতায় যেটুকু গোছানো সবুজাভ নীরবতা আছে-
সব দিয়ে সাজাও এখুনি।
দাও দুপুরের খামে মোড়া বিপুল আকাশ-
বিকেলের দ্রবীভূত রোদ।
পুষ্টিকর আরও কিছু জ্যোতির্ময় সূর্যের তবারক।
তিনটি জারুল এসে আশীর্বাদ করে যাবে ওকে।
থোকা থোকা একগুচ্ছ ভোরের চিবুকে-
সব উৎসব ঢেলে দাও।
প্রণোদনা দাও।
তারাজ্বলা বর্ণমালা দাও।
এবার ও-শুশ্রুষার নামতা শিখুক।
মাতৃতা, মাতুতা আরও একবার ওকে মাতৃসুধা দাও!